দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ বাসীর উদ্দেশ্যে এক বিশাল বড় সুখবর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্ৰামীন আবাস যোজনাকে ঘিরে চলতে থাকা দুর্নীতির কারণে দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। এবারে সেই সমস্যার দ্রুত সমাধান ঘটতে চলেছে। আগামী ২১ শে অক্টোবর থেকে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণের জন্য সমীক্ষা শুরু করা হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের গ্ৰামীন আবাস যোজনার অন্তর্গত “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের আওতায় কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গে মোট ১১ লক্ষ বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বিগত আড়াই বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের দরুন কোনো টাকা রাজ্য সরকারকে পাঠায় নি। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার এই অভিযোগ তুলেছে যে পশ্চিমবঙ্গে গ্ৰামীন আবাস যোজনাকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্নীতি চলছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এইসব অভিযোগ গুলির মধ্যে কিছু অভিযোগ ইতিমধ্যেই প্রমানিত হয়েছে তবে এখনো এমন বহু অভিযোগ রয়েছে যেগুলি এখনও পর্যন্ত প্রমাণ করা যায় নি। তবে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন “যে বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ না পাঠালেও রাজ্য সরকার নিজের রাজকোষ থেকে অর্থ ব্যায় করে পশ্চিমবঙ্গে সাড়ে ১১ লক্ষ বাড়ি নির্মাণ করাবে।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেছেন যে এর জন্য “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রতিটি গ্ৰাহককে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তবে তার আগে এই প্রকল্পের আবেদনকারীদের যোগ্যতা যাচাই করে দেখে নেওয়া হবে যে তারা সত্যি সত্যিই এই প্রকল্পের টাকা পাওয়ার জন্য যোগ্য কি না। তার জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হবে।
কি কারনে মুচলেকা নেওয়া হবে?
রাজ্য সরকারের তরফে হিসাব নিকাশ করে দেখা গেছে যে “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১১ লক্ষ বাড়ি নির্মাণ করতে রাজ্য সরকারের খরচ পড়বে মোট ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে এই অর্থ গ্ৰাহকেরা এক বারে পাবেন না। মোট তিনটি কিস্তিতে এই অর্থ গ্ৰাহকদেরকে প্রদান করা হবে। প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে ৬০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে ৪০ হাজার টাকা এবং বাকি ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে শেষ অর্থাৎ তৃতীয় কিস্তিতে।
এবারে “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পের আওতায় টাকা দেওয়ার জন্য মুচলেকা এই কারনেই চাওয়া হয়েছে যে এর আগে অনেক বার এমনটা ঘটেছে যে অনেক গ্ৰাহক বসত বাড়ি বানানোর নাম করে এই প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সেই টাকা অন্য কোনো ব্যাক্তিগত কাজে খরচ করেছেন। তাই এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই কারণে এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
গ্ৰাহক দেরকে কি করতে হবে?
যে সকল গ্ৰাহকেরা সমীক্ষার শেষে যোগ্য বলে মনোনিত হবেন তাদেরকে মুচলেকা জমা দিয়ে এটাই প্রমাণ করতে হবে যে তারা এই প্রকল্পের টাকা নিয়ে কেবলমাত্র নিজের বসত বাড়িই তৈরির কাজেই সেই টাকা খরচ করবেন। অন্য আর কোনো ব্যাক্তিগত কাজে নয়।
সরকারের তরফে গননা করে দেখা হয়েছে এখনো অবধি আমাদের রাজ্যে মোট ৩০ থেকে ৪০ হাজার অসমাপ্ত বাড়ি রয়েছে। বসত বাড়ি তৈরির নাম করে এই প্রকল্পের টাকা নিয়েও বাড়ি তৈরির কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। তাই এই ধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে তা আটকাতেই এই মুচলেকা দাবির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এতে করে সাধারণ মানুষ দায়িত্ববান হয়ে উঠবে বলে সরকার মনে করছে।
মুচলেকা দাবির কারন কি?
এই মুচলেকা চাওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ এই মুচলেকা গুলি রেকর্ড করে রেখে দেবে। যাতে ভবিষ্যতে এই বিষয়ে কোনো রূপ অভিযোগ উঠলে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত কতৃপক্ষের কাছ থেকে সেই মুচলেকা নিয়ে আদালতে পেশ করতে পারে। সেই কারণেই বাংলা আবাস যোজনাকে ঘিরে হওয়া দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে এই মুচলেকা আদায়ের সিদ্ধান্তকে যথাযথ পদক্ষেপ বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
Hello, my name is Sujit Roy. I have been working on various jobs and informative content writing for three years. Through my experimental content writing experience, I provide valuable content on this website.